পুরুষ ও নারীদের ওযু ভঙ্গের কারণ সমূহ – oju vonger karon

প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর উপর যেকোনো নামাজ (নফল, সুন্নত, ওয়াজিব, কিংবা ফরজ) যাই হোক না কেন এবং প্রত্যেক ওই সমস্ত ইবাদত বা কাজ যা আদায় করার জন্য ওযু শর্ত (যেমন কোরআন শরীফ স্পর্শ করা) সেই সমস্ত ইবাদতের জন্য ওজুরত থাকা বাধ্যতামূলক (ফরজ)।
শরীয়তে যে সমস্ত ইবাদত করতে ওযু শর্ত ঐ সমস্ত ইবাদত অজুবিহীন আদায় করলে তা আদায় হবে না। বরং যদি কেউ ইচ্ছাকৃত আদায় করে সেক্ষেত্রে সে অনেক বড় গুনাহগার হবে। যেমন নামাজ/তাওয়াফ/কোরআন শরীফ স্পর্শ করা করা ইত্যাদি।
সুতরাং আমরা বুঝতেই পারি যে শরীয়তে অজু কত বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই আমাদেরকে অজু সম্বন্ধে সর্বদা সচেষ্ট থাকা এবং পাশাপাশি ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি, ওযু ভঙ্গের কারণ কি কি, এবং পুরুষ ও নারীদের ওযু ভঙ্গের কারণ সমূহ কি কি তা জানা খুব বেশি জরুরী।
আপনার মনে যদি এ সমস্ত প্রশ্ন থেকে থাকে। তাহলে আর তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। কারণ আমরা আমাদের postsbd র আজকের আর্টিকেলটি সম্পন্ন সাজিয়েছি কি কি কারণে ওযু ভঙ্গ হয়ে যায়, ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি এবং পুরুষ ও নারীদের ওযু ভঙ্গের কারণ সমূহ কি তা নিয়ে।
ওযু ভঙ্গের কারণ সমূহ (পুরুষ ও নারী)
আমরা নিম্নে ওযু ভঙ্গের কারণ দলিল সহ বর্ণনা করেছিঃ
- পেশাব অথবা পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে।
যেমনঃ
- পায়খানা, প্রস্রাব কিংবা পোকা (কৃমি ইত্যাদি) বেরোলে ওযু ভেঙ্গে যাবে।
আল্লাহ পাক (সূরা মায়েদা, আয়াত নং ০৬) এ বলেন, তোমরা কেউ পেশাব পায়খানা সেরে যদি (তুমি নামাজ পড়তে চায় যেন পবিত্রতা অর্জন করো)
রাসূল (সাঃ) বলেছেন শরীর থেকে যা,ই বের হবে। তার কারণে ওযু ভেঙ্গে যাবে। হাদিসটি ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে। (বায়হাকিঃ৫৬৮)
- মুখ ভরে বমি হলে।
রসূল (সাঃ) বলেন যদি কারোর বমি হয়। অথবা মজি (সহবাসের আগে যে সাদা সাদা পানি) বের হয় বা নাক দিয়ে রক্ত বের হয় তাহলে সে যেন পুনরায় অজু করে। হাদিসটি হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে। (ইবনে মাজাহঃ ১২২১)
- শরীর থেকে রক্ত, পুজ অথবা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।
(মুয়াত্তা মালিক ১১০ নং হাদিসে) বর্ণিত রয়েছে যে হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর যখন নাক থেকে রক্ত ঝরতো। তখন তিনি পুনরায় অজু করে নিতেন।
- থুতুর সাথে রক্তের ভাগ সমান কিংবা বেশি হলে।
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবাইয় ১৩৩০ নং হাদিসে) হযরত হাসান বসরী রহঃ বলেন। যদি কেউ তার থুতুর সঙ্গে রক্ত দেখে এবং থুতুর মধ্যে রক্ত প্রবল না হয়। তাহলে পুনরায় ওযু করা জরুরি নয়।
- হেলান দিয়ে ঘুমালে চাই চিৎ হয়ে বা কাত হয়ে।
রসূল (সাঃ) বলেন যদি কেউ সেজদা অবস্থায় ঘুমায়, তাহলে তার ওজন ভাঙবে না। হ্যাঁ তবে চিত হয়ে ঘুমালে অজু ভেঙ্গে যাবে। কারণ চিৎ বা কাত হয়ে শুলে শরীর ঢিলা হয়ে যায়। হাদীসটি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে। (আবু দাউদ শরীফ হাদিস নং ২০২)
ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
- মাতাল পাগল বাও চেতন হলে।
যদি কোন লোক ওযু করার পর মাতাল হয়ে যায়। কিংবা অচেতন (বেহুশ) হয়ে যায় সে ক্ষেত্রেও তার অজু ভেঙ্গে যাবে এবং পুনরায় ওজু করতে হবে। ঠিক পাগল হলেও।
- উচ্চস্বরে নামাজে হাসলে।
রসূল (সাঃ) বলেন কেউ যদি নামাজে জোরেশোরে হাসে, তার ওযু এবং নামাজ উভয়টাই নষ্ট হয়ে যাবে এবং অজু করে পুনরায় আদায় করতে হবে। (সুনানে দার কুতনি হাদিস নং ৬১২)
পড়ুনঃ
প্রশ্ন উত্তর
ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি?
ওযু ভঙ্গের কারণ ৭টি
নারীদের ওযু ভঙ্গের কারণ কি?
নারী এবং পুরুষ উভয়ের ওযু ভঙ্গের কারণ এক।

ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি
ওযু ভঙ্গের কারণ ৭টি
আপনার অনেকে আবার জানতে চান যে, ওযু ভঙ্গের কারণ ৭টি কি কি আপনাদের জন্য আমি আবারও লিখছি।
যথাঃ
পেশাব অথবা পায়খানার রাস্তা দিয়ে কিছু বের হলে।
মুখ ভরে বমি হলে।
শরীর থেকে রক্ত, পুজ অথবা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়লে।
থুতুর সাথে রক্তের ভাগ সমান কিংবা বেশি হলে।
হেলান দিয়ে ঘুমালে চাই চিৎ হয়ে বা কাত হয়ে।
মাতাল পাগল বাও চেতন হলে।
উচ্চস্বরে নামাজে হাসলে।
মহিলাদের ওযু ভঙ্গের কারণ কি?
শরীয়তে নারী এবং পুরুষের ওযু ভাঙ্গার ক্ষেত্রে কোন পার্থক্য নেই।
কাউকে বকাদিলে কি ওযু ভেঙ্গে যায়?
জি না কাউকে বকা কিংবা গালি দিলে ওযু ভাঙবে না।
পরিশেষ
যথার্থ চেষ্টা করেছি ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি, ওযু ভঙ্গের কারণ কি কি, এবং পুরুষ ও নারীদের ওযু ভঙ্গের কারণ সমূহ কি এ বিষয়ে আপনাদেরকে সম্পূর্ণ সঠিক জানান দিতে। আশা করি আপনারা আমাদের এই ছোট্ট আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা ওযু ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কি তা জানতে পেরেছেন।